ভারতের উত্তরপূর্বের স্বাধীনতাকামীরা শক্তিশালী হচ্ছে
বিবিসি বাংলার মতে ধিরে ধিরে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্য গুলোতে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক অবহেলার কারনে এর স্বাধীনতাকামীরা ধিরে ধিরে শক্তিশালী হয়ে উঠছে ।

উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি সংগঠনগুলি যখন অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে আর সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনাও কমে আসছে, তখনই মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি ওই অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে বলে সংস্থাটি বলছে৻
উত্তরপূর্ব ভারতে মাওবাদীরা কীভাবে নিজেদের সংগঠন বাড়াচ্ছে, তা নিয়ে প্রকাশিত দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের এক বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আলফা, ও বোড়ো জঙ্গি সংগঠন, এন ডি এফ বি বা নাগাল্যান্ডের এন এস সি এন, ও মনিপুরের পি এল এ- র মতো গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে মাওবাদী গেরিলারা নিজেদের সমঝোতা যথেষ্ট দৃঢ় করে তুলেছে৻
ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের রিসার্চ ফেলো অজিত সিং বিবিসি-কে বলেন, “মাওবাদীরা নিজেদের ঘাঁটি এলাকা, মধ্যভারতে খুবই চাপের মধ্যে আছেন, তাই উত্তরপূর্ব ভারতের দিকে নজর দিয়েছেন তাঁরা৻ আলফা, এন ডি এফ বি, পি এল এ-র মতো সংগঠনগুলির মাধ্যমে চীনা অস্ত্র খুব সহজেই পাচ্ছে মাওবাদী পার্টি ৻”
অস্ত্র সরবরাহের রুট হিসাবে উত্তরপূর্ব ভারতকে ব্যবহার করলেও মতাদর্শগত বোঝাপড়াও তৈরি হয়েছে মাওবাদী পার্টি আর আসাম, মনিপুর বা নাগাল্যান্ডের সংগঠনগুলির সঙ্গে৻
কর্মকর্তারা বলছেন যে আসামে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন যুবককে জেরা করে তাঁরা মাওবাদীদের কার্যকলাপের সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন৻

“বেশ কিছু অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ আর বনরক্ষীদের কাছ থেকে৻ জোর করে চাঁদা আদায়ের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে৻ আলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার পরে পরেশ বড়ুয়ার গোষ্ঠী অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে আর তারাই মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলেছে৻” বলেন উত্তর আসামের বিভাগীয় কমিশনার ইফতিকার হুসেন।
যদিও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন যে মাওবাদীদের প্রভাব সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তবে মাওবাদী বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা সুবীর দত্ত বলছেন “কুড়ি বছরেরও বেশী সময় ধরে মাওবাদীরা আসামে কাজ করছেন৻ ২০০৪ সালে এম সি সি আর জনযুদ্ধ গোষ্ঠী মিশে গিয়ে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি তৈরি হওয়ার আগে শুধু এম সি সি আসামে কাজ করত৻ নতুন পার্টি হওয়ার পরে তারা বাড়তি নজর দেয় ওই অঞ্চলে৻ তাদের লক্ষ্যই ছিল যে উত্তরপূর্বের যেসব রাজ্যে জাতিস্বত্ত্বার আন্দোলন চলছে, সেগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর৻ সেই কাজে সম্প্রতি তারা সফল হয়েছে৻”
কর্মকর্তারা বলছেন যে আলফার অতি সক্রিয়তার সময়ে মাওবাদীরা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পারে নি৻ কারণ আলফার রাজনীতির ভিত্তি ছিল অসমীয়া জাতীয়াবাদ৻
মি. ইফতিকার হুসেনের কথায়, “যখন আলফার মূল গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে, তখনই অসমীয়া জাতীয়াবাদের রাজনীতি কিছুটা দূর্বল হয়েছে, সেই সুযোগেই নিজেদের মতাদর্শের প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি৻”
গোয়েন্দারা বলছেন আসাম-অরুণাচল সীমান্ত লাগোয়া সাদিয়া অঞ্চলের অনেক গ্রাম থেকেই যুবকরা কাজের জন্য অন্য রাজ্যে যাওয়ার অছিলায় আসলে মাওবাদী সংগঠনে যোগ দিয়েছেন৻
গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় মাওবাদী গেরিলারা প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে নিয়মিত আশ্রয়ও পাচ্ছেন৻ চাবাগানগুলিতেও সংগঠন গড়ে তুলছেন মাওবাদী গেরিলারা৻
ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে যে জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও মাওবাদীরা নিজেরা যেমন সদস্য যোগাড় করছে, তেমনই উত্তরপূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে সম্প্রতি যেসব গণআন্দোলন দেখা যাচ্ছে, সেগুলিতেও সক্রিয়ভাবে মাওবাদীরা যোগ দিচ্ছেন৻
অরুণাচলে যেমন নদীবাঁধ বিরোধী আন্দোলন চলছে, মনিপুরে প্রায় একশো দিন ধরে অর্থনৈতিক অবরোধ চলল, আসামে নতুন জেলার দাবিতে আন্দোলন চলছে। আর এই সব আন্দোলনই স্থানীয় স্তরে জনসমর্থন পাচ্ছে৻ মাওবাদীদের এইসব আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা দেখা যাচ্ছে৻
তবে অরুণাচল সহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের গণ আন্দোলনগুলির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা অবশ্য বলছেন যে মাওবাদীদের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই৻
তারা বলছেন সাধারণ মানুষের আন্দোলনগুলি ধ্বংস করতেই সরকার মাওবাদী তকমা লাগাচ্ছে যাতে মাওবাদী যোগাযোগের অভিযোগে নেতা-কর্মীদের আটক করা যায়৻
বিবিসি বাংলা
ভারতের জঙ্গলে প্রশিক্ষণরত মাওবাদী গেরিলা
ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি গবেষণা সংস্থা বলছে যে সেদেশের মাওবাদী সংগঠন উত্তরপূর্বাঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে৻
উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি সংগঠনগুলি যখন অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে আর সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনাও কমে আসছে, তখনই মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি ওই অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে বলে সংস্থাটি বলছে৻
উত্তরপূর্ব ভারতে মাওবাদীরা কীভাবে নিজেদের সংগঠন বাড়াচ্ছে, তা নিয়ে প্রকাশিত দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের এক বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আলফা, ও বোড়ো জঙ্গি সংগঠন, এন ডি এফ বি বা নাগাল্যান্ডের এন এস সি এন, ও মনিপুরের পি এল এ- র মতো গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে মাওবাদী গেরিলারা নিজেদের সমঝোতা যথেষ্ট দৃঢ় করে তুলেছে৻
মাওবাদীরা নিজেদের ঘাঁটি এলাকা, মধ্যভারতে খুবই চাপের মধ্যে আছেন, তাই উত্তরপূর্ব ভারতের দিকে নজর দিয়েছেন তাঁরা৻
অজিত সিং, ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট
ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের রিসার্চ ফেলো অজিত সিং বিবিসি-কে বলেন, “মাওবাদীরা নিজেদের ঘাঁটি এলাকা, মধ্যভারতে খুবই চাপের মধ্যে আছেন, তাই উত্তরপূর্ব ভারতের দিকে নজর দিয়েছেন তাঁরা৻ আলফা, এন ডি এফ বি, পি এল এ-র মতো সংগঠনগুলির মাধ্যমে চীনা অস্ত্র খুব সহজেই পাচ্ছে মাওবাদী পার্টি ৻”
অস্ত্র সরবরাহের রুট হিসাবে উত্তরপূর্ব ভারতকে ব্যবহার করলেও মতাদর্শগত বোঝাপড়াও তৈরি হয়েছে মাওবাদী পার্টি আর আসাম, মনিপুর বা নাগাল্যান্ডের সংগঠনগুলির সঙ্গে৻
কর্মকর্তারা বলছেন যে আসামে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন যুবককে জেরা করে তাঁরা মাওবাদীদের কার্যকলাপের সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন৻
মাওবাদীদের নজর এখন উত্তর পূর্ব ভারতের দিকে
“বেশ কিছু অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ আর বনরক্ষীদের কাছ থেকে৻ জোর করে চাঁদা আদায়ের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে৻ আলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার পরে পরেশ বড়ুয়ার গোষ্ঠী অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে আর তারাই মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলেছে৻” বলেন উত্তর আসামের বিভাগীয় কমিশনার ইফতিকার হুসেন।
যদিও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন যে মাওবাদীদের প্রভাব সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তবে মাওবাদী বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা সুবীর দত্ত বলছেন “কুড়ি বছরেরও বেশী সময় ধরে মাওবাদীরা আসামে কাজ করছেন৻ ২০০৪ সালে এম সি সি আর জনযুদ্ধ গোষ্ঠী মিশে গিয়ে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি তৈরি হওয়ার আগে শুধু এম সি সি আসামে কাজ করত৻ নতুন পার্টি হওয়ার পরে তারা বাড়তি নজর দেয় ওই অঞ্চলে৻ তাদের লক্ষ্যই ছিল যে উত্তরপূর্বের যেসব রাজ্যে জাতিস্বত্ত্বার আন্দোলন চলছে, সেগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর৻ সেই কাজে সম্প্রতি তারা সফল হয়েছে৻”
কর্মকর্তারা বলছেন যে আলফার অতি সক্রিয়তার সময়ে মাওবাদীরা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পারে নি৻ কারণ আলফার রাজনীতির ভিত্তি ছিল অসমীয়া জাতীয়াবাদ৻
মি. ইফতিকার হুসেনের কথায়, “যখন আলফার মূল গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে, তখনই অসমীয়া জাতীয়াবাদের রাজনীতি কিছুটা দূর্বল হয়েছে, সেই সুযোগেই নিজেদের মতাদর্শের প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছে মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি৻”
বেশ কিছু অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ আর বনরক্ষীদের কাছ থেকে৻ জোর করে চাঁদা আদায়ের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে৻
ইফতিকার হুসেন, আসাম বিভাগীয় কমিশনার
গোয়েন্দারা বলছেন আসাম-অরুণাচল সীমান্ত লাগোয়া সাদিয়া অঞ্চলের অনেক গ্রাম থেকেই যুবকরা কাজের জন্য অন্য রাজ্যে যাওয়ার অছিলায় আসলে মাওবাদী সংগঠনে যোগ দিয়েছেন৻
গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় মাওবাদী গেরিলারা প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে নিয়মিত আশ্রয়ও পাচ্ছেন৻ চাবাগানগুলিতেও সংগঠন গড়ে তুলছেন মাওবাদী গেরিলারা৻
ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে যে জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও মাওবাদীরা নিজেরা যেমন সদস্য যোগাড় করছে, তেমনই উত্তরপূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে সম্প্রতি যেসব গণআন্দোলন দেখা যাচ্ছে, সেগুলিতেও সক্রিয়ভাবে মাওবাদীরা যোগ দিচ্ছেন৻
অরুণাচলে যেমন নদীবাঁধ বিরোধী আন্দোলন চলছে, মনিপুরে প্রায় একশো দিন ধরে অর্থনৈতিক অবরোধ চলল, আসামে নতুন জেলার দাবিতে আন্দোলন চলছে। আর এই সব আন্দোলনই স্থানীয় স্তরে জনসমর্থন পাচ্ছে৻ মাওবাদীদের এইসব আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা দেখা যাচ্ছে৻
তবে অরুণাচল সহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের গণ আন্দোলনগুলির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা অবশ্য বলছেন যে মাওবাদীদের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই৻
তারা বলছেন সাধারণ মানুষের আন্দোলনগুলি ধ্বংস করতেই সরকার মাওবাদী তকমা লাগাচ্ছে যাতে মাওবাদী যোগাযোগের অভিযোগে নেতা-কর্মীদের আটক করা যায়৻
বিবিসি বাংলা
Comments
Post a Comment